শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০২:৩৪ পূর্বাহ্ন

চলে গেলেন বরেণ্য অভিনেতা ও আবৃত্তিকার সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়

নিউজ ডেস্ক : বরেণ্য অভিনেতা ও আবৃত্তিকার সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আর নেই। দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন ফেলুদা। তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। তার চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রের বর্ণিল এক অধ্যায়ের সমাপ্ত হলো।

করোনাই যেন অনুঘটকের মতো সৌমিত্রকে এগিয়ে নিয়ে গেল না-ফেরার দেশে। তবে অনেকরকম জটিলতা দেখা গিয়েছিল শরীরে। ৪০ দিন ধরে কলকাতার বেলভিউ  নার্সিং হোমে ছিলেন তিনি। গত ২৪ অক্টোবর রাত থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। রোববার সকালে হাসপাতাল থেকে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন সৌমিত্র। চিকিৎসায় স্বাভাবিক নিয়মে করোনামুক্তও হয়েছিলেন। কিন্তু শরীরে থাকা বার্ধক্যজনিত নানা রোগের সঙ্গে লড়াই করে পেরে উঠছিলেন না। ফলে দীর্ঘদিন লাইফ সাপোর্টে থাকতে হয়েছে তাকে। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। বুধবার বিকেলের পর থেকেই চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যান এই বর্ষীয়ান অভিনেতা। মাল্টিঅর্গান ফেইলিওর, ব্রেনডেড হয়ে মৃত্যু হয় তার।

তিনদিন আগে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শ্বাসনালিতে অস্ত্রোপচার হয়। অস্ত্রোপচার সফলও হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, তার শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ঠিকঠাক কাজ করছে। তবে তিনি খুব দুর্বল। শ্বাসনালিতে অস্ত্রোপচারের পর সৌমিত্রকে প্লাজমা থেরাপিও দেওয়া হয়েছিল।

‘ঘরে বাইরে’ ছবির সেটে সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে – আনন্দবাজার পত্রিকা

এর আগে গত ৬ অক্টোবর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি হন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। এরপর ১৪ অক্টোবর অভিনেতার কোভিড-১৯ রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কিন্তু কোভিড এনসেফেলোপ্যাথির কারণে তার স্নায়ুতে প্রভাব পড়ে। এরপর থেকেই প্রায় অচেতন ছিলেন তিনি। মাঝে কয়েকদিন চোখ মেলে সাড়া দিচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ আবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। রোববার দুপুরে এলো তার মৃত্যুর খবর।

দর্শক নন্দিত এ অভিনেতা জীবনের বেলাশেষে চলে গেলেন অতল মৃত্যুর আহ্বানে। বাঙালি হারাল এ সময়ের এক অন্যতম সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে। প্রায় সাত দশকের দীর্ঘ ফিল্ম-ক্যারিয়ার সৌমিত্রের। সত্যজিৎ রায়ের ‘অপুর সংসার’ দিয়ে শুরু তার অভিনয়জীবন।

সৌমিত্র চট্টপাধ্যায়ের মেয়ে পৌলমী জানিয়েছেন, দুপুরে প্রথমে গল্ফগ্রীনের বাড়িতে নেওয়া হবে তার বাবাকে। এরপর টেকনিশিয়ান স্টুডিও হয়ে রবীন্দ্র সদনে নেওয়া হবে মরদেহ। সেখান থেকে নেওয়া হবে কেওড়াতলা শ্মশান, যেখানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: