শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১১:০১ পূর্বাহ্ন
আজমাইন ফায়েক আবির
জুতো জোড়ায় আমাদের আর দীর্ঘদিন মস্তবড় শরীরের ওজন পড়ে না
হাইওয়েতে নেই গাড়ীগুলোর ওভারটেকিং প্রবণতা
পথশিশুদের কোমল হাতগুলোতে আর বিজ্ঞাপনের পাতা নেই,
নেই শহরের বুকে ঘিঞ্জিজ্যাম!
যেমনটি বহুদিনের কল্পনা এই নগরবাসীর
এমন শুনশান শহরই কি আমরা চেয়েছিলাম?
একঘেয়ে জীবন থেকে বেরিয়ে আসার আমাদের কামনা যত-
ফেলে গেলো তবে আজ,
তাহলে কেন আজ প্রতি ঘরে-ঘরে মুক্তির আন্দোলন?
সবাই রাস্তা ছুঁবে, আপন ঠিকানা হতে উড়াল দিবে বলে মরিয়া আজ?
এটিই না কাক্সিক্ষত চাওয়া ছিল আমাদের তা নয় কী?
মুখ ভার করে বাসের সিটে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর অপেক্ষা যত
ট্রেনের বগিগুলোতে মানবদেহের ঠেলাঠেলি
ঐ গেঞ্জামেই ফেরী করতো কিছু অভাবী লোকেরা,
তাদের কী হলো তারা কোথায় আজ?
তারা কী এখন স্বপ্নে ফেরী করে ফেরে?
রাস্তার হকার্সগুলো আজ কোথায় সাজায় তাদের কমদামী পসরা যত?
ক্যাম্পাসের সামনের টঙগুলো আজ বন্ধ প্রায় দু-মাস!
ডিপার্টমেন্টে ফোটা অর্কিডগুলোতে কেউ কী এখনো পানি দেয়-
রোজ সকাল-বিকেল নিয়ম করে?
না কি গলির অবলা প্রানীগুলোর মতো তারাও আজ উপবাস? জানা নেই,
এপমোস্টফিয়ারের প্রতিটি স্তর আজ সেরে উঠেছে
বায়ুদূষন শব্দটি দীর্গদিন হেডলাইন হয় না পত্রিকাতে
রাস্তার ল্যামপোস্টের চাইতে উজ্জ্বল আজ-
পথে পড়ে থাকা কাঠগোলাপ, কৃষ্ণচূড়া আর বয়স্ক গাছের জবা ফুলগুলো
এখন ডাস্টবিনের দুর্গন্ধে আর নাকে হাত চাপতে হয়না,
বরং বেলী-শিউলী আর গন্ধরাজের ঘ্রাণে মোহিত রাস্তার মোড়গুলো!
আমাদের বেলকনী থেকে এখন চত্বরগুলো রঙিন বেশি
পাখিরা আর ঐ বেলকনীতে শিস দিতে আসেনা-
তারা নির্ভয়ে এখন ডালে ডালে বাসা বাঁধে
কেউ ঢিল ছুঁড়বেনা, নেই সংসার ভেঙে যাবার ভয়।
তবে, এই ক্লান্তিময় দীর্ঘশ্বাসের ছুটিতে-
কতখানি বদলেছি আমরা?
কতটা ইকো-ফ্রেন্ডলি করে তুলেছি নিজেদের স্বভাবগুলো, এই বন্ধে?
আজ আপনা নির্মিত ভুবনগুলো কারাগার মনে হয়
প্রকৃতির চেয়ে রুক্ষ বৈরী তো ছিলাম আমরা!
তবে, প্রকৃতি জননী মমতাময়ী দয়াল নিশ্চয়ই-
অচিরেই মুক্তি দিবে আমাদের
তবে যেন, আর স্বৈরাচারী না হয়ে উঠি-
বিপর্যস্ত না করি সেই প্রকৃতিকোল
যেখানে বেড়ে ওঠে বৃক্ষরাজী, প্রাণীকূল ও আমরা!