বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০৯:১৯ অপরাহ্ন

করোনায় শিক্ষার ব্যপক ক্ষতি

মহান ও নিবেদিত পেশা হিসেবে শিক্ষকতা সর্বজন স্বীকৃত। মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবেই মনে করা হয় শিক্ষকদের। পাঠদানে আত্ম-নিয়োগ, শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিহিত থাকা সুপ্ত মেধা জাগ্রত করা, দুঃস্থ ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিজের অর্থ ব্যয়ে দেশ সেরা হিসেবে গড়ে তোলা শিক্ষকও দেশে বিরল নয়।

এ জন্যই সমাজে শিক্ষকরা সবচেয়ে বেশি সম্মানিত, শিক্ষার্থীরাও যুগে যুগে স্মরণ রাখেন। করনাভাইরাস পাল্টে দিয়েছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনাভ্যাস। আমাদের চারপাশে এক অদ্ভুত অনিশ্চয়তা ভর করে বসেছে। খাদ্যের অনিশ্চয়তা, চাকরি থাকা না থাকার অনিশ্চয়তা, সন্তানের পড়ালেখার অনিশ্চিয়তা, চিকিৎসার অনিশ্চিয়তা, করোনায় মৃত্যু হলে দাফন কাফনের অনিশ্চয়তা। দেশে দেশে মানুষ চাকরি হারাচ্ছে।

কর্মহীন হয়ে পড়ছে শ্রমিক। কলকারখানায় থেমে গেছে উৎপাদনের চাকা। এদিকে গত বছর এপ্রিল মাসের রপ্তানি আয় দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। সরকারের রাজস্ব আদায় হ্রাস পেলেও বৃদ্ধি পেয়েছে রাজস্ব ব্যয়। ব্যয় মেটাতে সরকারের ঘাড়ে বাড়ছে ঋণের চাপ। দেশে দেশে খাদ্য সংকটের আশঙ্কা প্রকট হচ্ছে। এমন এক অনিশ্চিত বিশ্বে শিক্ষা ক্ষেত্রেও দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। বিজনেস ইনসাইডারের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বের প্রায় ১৮৮টি দেশের শিক্ষার্থীরা করোনাকালে সরাসরি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বাধাগ্রস্ত হয়েছে তাদের শিক্ষাকাল। স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ।

শিক্ষার্থীরা ঘরবন্দি। অবশ্য কিছুকিছু দেশে পরিস্থিতি ভেদে স্কুল-কলেজ খুলে দিতে শুরু করেছে। তবে তা খুবই সীমিত আকারে। বাংলাদেশে প্রায় ১৬ মাস ’ সময় ধরে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কবে আবার শিক্ষা কার্যক্রমকে স্বাভাবিক করা যাবে সেটাও অনিশ্চিত। যখন কলামটি লিখছি তখন করোনায় বেসামাল গোটা বিশ্ব, মহামারী করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের তা-বে তটস্থ গোটা বিশ্ব।

বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যা কোনোভাবেই কমছে না। সবশেষ করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ কোটি ২৫ লাখ ৯৮ হাজার ৩৬৯ জন। আর এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২ লাখ ৯৪ হাজার ৬৬৩ জনে। নতুন আক্রান্ত ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫৪২ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছে ১৮ কোটি ৫৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮৮ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তের করোনা তথ্য মতে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে সর্বচ্চ মারা গেছে ২৬৪ জন।

সম্প্রতি করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ বেড়ে যায়। এতে মৃত্যুর মিছিলও বড় হচ্ছে। গত বছর ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারীতে পরিণত হয়েছে। জন্স হপকিন্সের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত আক্রান্ত সাড়ে ২০ কোটি ছুই ছুই করোনাভাইরাসের প্রকোপে এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে গোটা বিশ্ব। শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাধ্যমিক পর্যায়ে সংসদ টিভির মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইন ক্লাস চালু করার সরকারী নির্দেশনা থাকলেও বেশীরভাগই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সে নির্দেশনা পালন করছেন না।

মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষার্থীদের জন্যও একইভাবে চালু করা হয়েছে টিভিতে সীমিত আকারে পাঠদান। যদিও ক্লাসের গুণগতমান ও তার কার্যকারিতা নিয়ে দেশের ভিতরে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ও টিভিতে প্রাথমিকের ক্লাস চালু করেছে। যদিও প্রন্তিক জনপদে টিভি না থাকার দেখতে না পরারও অভিযোগ রয়েছে। অনেক এলাকায় সংসদ টিভি দেখা যাচ্ছে না অভিযোগ রয়েছে। যে সব এলাকায় সংসদ টিভি দেখা যায় না সে সব এলাকার প্রতিষ্ঠানের তথ্য চেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর চিঠি দিয়েছেন। আবার যাদের টিভি আছে তারাও মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে সঠিকভাবে ক্লাসে যোগদান করতে পারছে না। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত বছর ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অব্যাহতভাবে বন্ধ রয়েছে।

গত বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম সায়মিক পরীক্ষাও নেয়া সম্ভব হয় নি ফলে অটো পাস পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। এবছর শিক্ষা মন্ত্রণালয় পাবলিকসহ অন্যান্য পরীক্ষাগুলিতে এ্যাসাইনমেন্ট এর উপর বেশী গুরুত্ব দিচ্ছেন।

মাসের পর মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে কিছু অসৎ, প্রাইভেটবাজ ও কোচিংবাজ শিক্ষক অর্থের লোভে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মধ্যে রেখে তাদের প্রাইভেট কোচিং চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা জেলা এ প্রবণতা কয়েকগুন বেশী। প্রশাসন এসব কোচিং বাজ, প্রাইভেটবাজ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন যা স্থানীয় দৈনিক, জাতীয় দৈনিক, টিভি, অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত নিউজের মাধ্যমে জানা গেছে। তার পরেও কেচিংবাজ, প্রাইভেটবাজ শিক্ষকগণ তাদের অবৈধ কার্যক্রম বাধাহীনগতিতে চালিয়ে যাচ্ছেন। এদের ব্যপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলে করোনা ক্ষেত্র সৃষ্টি হতে থাকবে।

গত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের তারিখ কয়েক বার পরিবর্তন করে দেরীতে হলেও অনলাইনে প্রকাশ করা সম্ভব হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সেমিস্টার ফাইনালও আটকে আছে। ফলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষাব্যবস্থা একযোগে হুমকির মুখে পড়েছে। এবছর মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হলেও বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য ভর্তি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি।

এ অবস্থায় করণীয় ঠিক করতে কাজ করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। আন্তর্জাতিকভাবে পরিচালিত হয় ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের পড়ালেখা এবং সারা বিশ্বে একই দিনে অনুষ্ঠিত হয় পরীক্ষা। করোনা প্রাদুর্ভাবের বর্তমান পরিস্থিতিতে অ্যাডেক্সেল ও ক্যামব্রিজের অধীনে গত বছরের মে-জুনের ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেলের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। জুনে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোর বার্ষিক পরীক্ষাও প্রয়োজনে অনলাইনেই গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষ জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির আবহে দেশে জাতীয় কারিকুলামের অধীনে পরিচালিত শিক্ষাব্যবস্থার করণীয় ঠিক দকরতে কাজ শুরু করেছে দুই মন্ত্রণালয়। কয়েক দফা স্বপ্লপরিসরে সিলেবাস ঠিক করে দিয়েছে।

তবে কবে নাগাদ করোনার প্রাদুর্ভাব কমবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলা সম্ভব হবে, সেটাই বুঝতে পারছেন না মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। ২৯ মে পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে সবধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসাইনমেন্ট এর মাধ্যম শিক্ষর্থীদের মূল্যায়নের নির্দেশনা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রণালয়। এজন্য আপাতত যেভাবে টেলিভিশনে ক্লাস সম্প্রচার করা হচ্ছে সেভাবেই পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চান তাঁরা। তবে অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করা এবং সিলেবাস কিছুটা সংক্ষিপ্ত করে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছিল, করোনার কারণে সবকিছু এলোমেল হয়ে যাচ্ছে।

গত বছর ১৫ জুলাই থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফিস খোলার অনুমতি দেয়া হয়েছে, বিজ্ঞানাগার, পাঠাগার প্রভূতি সংরক্ষণ পুরস্কার পরিচ্ছন্ন জন্য। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বলেছিলেন, ‘আমরা আরো কিছুদিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে চাই। এরপর শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পোষাতে যা যা করার দরকার তার সবই মন্ত্রণালয় থেকে করা হবে। দেশের নামিদামি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোর বেশির ভাগেই চলছে অনলাইনে পড়ালেখা। তবে যেসব স্কুল এখনো অনলাইনে যেতে পারেনি, তারা পিছিয়ে পড়ছে।

’শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড এটা অতি পুরাতন কথা। আর বর্তমানকালে বলা হচ্ছে, আধুনিক তথা কর্মমুখী শিক্ষা ছাড়া শিক্ষা মূল্যহীন। এর সাথে নৈতিকতা ও মানকেও সম্পৃক্ত করা হয়েছে। তাই এসব ক্ষেত্রে যারা যত অগ্রগামী হচ্ছে, তারা তত উন্নতি করছে। তাই বেশিরভাগ দেশ এসবের দিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। তবে, এতে সব দেশই যে সমান সফল হয়েছে, তা নয়। তথাপিও যতটুকু উন্নতি করেছে, তাও থমকে গেছে করোনা মহামারিতে।

গত ২০১৯ ইং সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহানে করোনা সনাক্ত হওয়ার পর এর বিশ্বায়ন হয়েছে খুব দ্রুত। যা মোকাবেলার জন্য একে একে প্রায় সব দেশ লকডাউন করেছে। ফলে সব খাতের মতো স্বাস্থ্য খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউনিসেফ গত বছর ২৫ এপ্রিল বিবৃতিতে জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে হাম, ডিপথেরিয়া, পোলিওসহ বিভিন্ন রোগের টিকাদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আর এ কারণে লাখ লাখ শিশুর জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। অথচ প্রতি বছর দুই কোটির বেশি শিশুকে এসব টিকা দেওয়া হয়। কিন্তু ১.৩০ কোটির বেশি শিশু এসব টিকা এখনো নেয়নি।

সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বার্কলে বলেছেন, ‘যেসব শিশু বর্তমানে টিকা নিচ্ছে না; তাদের সারাটা জীবনই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। হাম কিংবা পোলিওর চেয়ে করোনাভাইরাস শক্তিশালী নয়। কিন্তু করোনার জেরে সেসব রোগের টিকা শিশুদের দেওয়া থেকে বিরত থাকার মতো ঘটনা ঘটছে।’ এর জের পড়বে শিক্ষায়।

অন্যদিকে, লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন বাড়িতে বন্দি থাকার কারণে শিশুরা স্থূল হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া, দুরন্তপনা থেমে যাওয়ায় এবং বন্ধুদের সাথে দেখা ও খেলা করতে না পারায় তারা মানসিকভাবে পর্যুদস্ত হয়ে পড়েছে। খাওয়া-দাওয়া করছে না ঠিকভাবে। ফলে চরম অপুষ্টি শিকার হচ্ছে। তন্মধ্যে গরীবরা বেশি। উপরন্তু হৈ-চৈ, চিৎকার, চেঁচামেচি, মারামারি, ভাঙচুর ইত্যাদি করছে। আগে যে কাজটি তারা রাস্তা-ঘাটে ও খেলার মাঠে করতো, সে কাজ এখন বাড়িতেই করছে তারা। এরও জের পড়বে শিক্ষায়। এই অবস্থার অবসান কবে হবে তা কেউই জানে না। তাই বিভিন্ন দেশ লকডাউনের মধ্যে শিশুদের বাইরে খোলা স্থানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। যা’হোক, লক-ডাউনের কারণে শিক্ষাখাতও বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় ১৬ মাস যাবত। তাতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।
সিএনএন’র খবরে প্রকাশ, ‘ইউনেস্কোর তথ্য মতে, বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৯০টি দেশের শিক্ষার্থীরা লকডাউনে আছে। অর্থাৎ স্কুল বন্ধ থাকার কারণে সারা বিশ্বের ৯০ শতাংশেরও বেশি শিক্ষার্থী এখন বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করছে। সব দেশেই আর্থিকভাবে সচ্ছলদের তুলনায় অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ধনীদের মতো অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়ার কম্পিউটার, অন্যান্য ডিভাইস ও ইন্টারনেট সংযোগ এবং নিরাপদ ও পড়াশোনার উপযোগী পরিবেশ পাচ্ছে না তারা। আর্থিক অনিশ্চয়তার কারণে তারা মানসিকভাবেও ভালো নেই। সব মিলিয়ে করোনা মহামারীর পর ধনী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের ফলাফলের পার্থক্য অনেক বেড়ে যাতে পারে।

এছাড়া, সেভ দ্য চিলড্রেনের ডিরেক্টর হ্যাজার্ড জানান, ২০১৫ সালে ইবোলা মহামারীর সময় সিয়েরা লিওনে স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছিল। এ সময় করা এক গবেষণায় দেখা যায়, মেয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর সহিংসতা ও নির্যাতনের মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। করোনাতেও একই অবস্থা হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো অনেক শিশু শিক্ষার্থীকেই জোর করে অর্থ উপার্জনে নামিয়ে দিতে পারে। তাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো পরে আর স্কুলে ফেরার সুযোগ পাবে না।’

উল্লেখ্য যে, ইউনেস্কো এর আগে বলেছে, করোনার কারণে বিশ্বের ১৪০ কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যদিকে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উন্নত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের অসংখ্য শিক্ষার্থী পড়াশুনা এবং পিএইচডি ও গবেষণা করে। তাদের মধ্যে যারা অসচ্ছল, তারা খন্ডকালীন কাজ করে শিক্ষা এবং থাকা-খাওয়ার ব্যয় বহন করে। কিন্তু লকডাউনের কারণে তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা চরম সংকটে পড়েছে। এছাড়া, সারা পৃথিবীর শিক্ষাব্যবস্থাই একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে। অন্যদিকে, বহু শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তন্মধ্যে অনেকেই মারা গেছে। উপরন্তু ব্রিটেনের চিকিৎসকরা সম্প্রতি জানিয়েছেন, করোনা চিকিৎসারত কিছু শিশুর দেহে খুবই বিরল কিন্তু বিপজ্জনক কিছু উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যপারে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন মহল থেকে চাপ থাকলেও সরকার নির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চিন্তা ভাবনা করছেন। সরকার কোনভাবে শিক্ষার্থীগণকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে চাচ্ছেনা। কোনা সূত্র বলছে শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তা ভাবনা করছেন সরকার। বিএনপির পক্ষ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যপারে জোর দাবি জনানো হচ্ছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান খুলে করোনা মহামারি আকার ধারণ করলে এর দায়ভার নিবে কে বিএনপি, শিক্ষার্থী, অভিভাবক?
দেশের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার সাধারণ ছুটি আরও এক দফায় বেড়েছে। গত বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাধারণ ছুটি আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত নতুন করে বাড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে গত সাড়ে ১৬ মাসে মোট ২২ দফা বাড়ানো হলো ছুটি। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টানা বন্ধ দাঁড়াচ্ছে ৫৩৩ দিনে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। কয়েক ধাপে এই ছুটির মেয়াদ বাড়ানোর পর চলতি বছরের ২৩ মে থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকপর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে বলে গত ২৫ মার্চ জানান শিক্ষামন্ত্রী।

তবে, দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালে সেই ছুটির মেয়াদ বাড়িয়ে ২৯ মে পর্যন্ত করা হয়। সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে না আসায় পুনরায় ছুটি ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরবর্তীতে গত বৃহস্পতিবার আবারও সেটি বাড়িয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করা হলো।

তথ্যমতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাধারণ ছুটির একটা তারিখ শেষ হলে ফের আরেকটা সময়ের জন্য ছুটি ঘোষণাই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ এ ছুটি যেন এখন বিষাদে পরিণত হয়েছে। তবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে অনলাইন ক্লাস চালু থাকলেও তাতে মিলছে না আশানুরূপ সাফল্য। যদিও সরকারিভাবে বলা হচ্ছে, শিক্ষকদের বাড়িতে পাঠিয়ে খোঁজখবর নিয়ে আর অন্তর্বর্তীকালীন পাঠ পরিকল্পনা ও অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিখনফল অর্জনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা করোনা মহমারিতে বিশ্বজুড়ে স্কুলভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। রোববার (১ আগস্ট) এক টুইটে তিনি জানিয়েছেন, করোনা মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থা পুনর্গঠনে সদস্য রাষ্ট্রসমূহের আরও মনযোগ দেওয়া প্রয়োজন।

টুইটে জাতিসংঘের মহাসচিব আরও বলেন, বিশ্বজুড়ে স্কুল শিক্ষা সংকট দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে। আমরা সবাই বর্তমানে এই সমস্যার ভূক্তভোগী। মহামারির কারণে বিশ্বের ১৫ কোটি ৬০ লাখ স্কুলগামী শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাদের মধ্যে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ সম্ভবত আর কখনও স্কুলে ফিরবে না। “মহামারি থেকে উত্তরণ কার্যকর করতে হলে সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা পুনর্গঠনে মনযোগ দেওয়া প্রয়োজন। শিক্ষকদের বেতন আরও বাড়ানো উচিত এবং বিশ্বজুড়ে আরও বেশি সংখ্যক শিশু যেন ডিজিটাল শিক্ষার আওতায় আসতে পারে- তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।” এর আগে গত ১২ জুলাই এক বিবৃতিতে করোনা মহামারির কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বন্ধ হয়ে যাওয়া স্কুল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় খুলে দেওয়ার আহবান জানিয়েছিল জাতিসংঘের দুই সংস্থা ইউনিসেফ ও ইউনেস্কো।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এবং করোনা সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির মতে, সংক্রমণ ৫ শতাংশে নেমে এলে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও একদিনে সর্বচ্চ ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত এটি দেশে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।

শনিবার (৭ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। আর ঢাকা বিভাগেরই ১০১ জন। এ নিয়ে করোনায় দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৪১১ জনে। ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ১৩৬ জন। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ৩৯৬ জনে। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। শনাক্তদের মধ্যে মৃত্যুহার ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৩১ হাজার ৭০২ জনের। পরীক্ষা করা হয়েছে ৩১ হাজার ৭১৪টি। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৮০ লাখ ৭৫ হাজার ৪০৭টি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে,আরও ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৬ হাজার ৩৮৩ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১১ লাখ ৮৮ হাজার ৮২০ জন। এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মোট মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ১৪ হাজার ৯৭৪ জন এবং নারী ৭ হাজার ৪৩৭ জন। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ১৪৫ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। এ ছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৬৪, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ২৮, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১৫, ২১ থেকে ৩০ বছরের ৮ এবং ১১ থেকে ২০ বছরের ১ জন মারা গেছেন।

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরো বলছেন, গতবছর লাগাতার বন্ধে প্রাক-প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ইতোমধ্যে গত বছরের তিনটি পাবলিক ও সব অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা বাতিল হয়েছে। সব শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয়েছে অটো পাস। এখন পর্যন্ত এবারের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। অনেক প্রচেষ্টায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বাগে আনা ‘সেশনজট’ ফিরে এসেছে। শুধু তা-ই নয়, নতুন করে প্রায় দুই বছরের বেশি সেশনজট জেঁকে বসেছে। এমনকি স্কুল-কলেজে এই সেশনজটের ঢেউ লাগার উপক্রম হয়েছে।

২২ দফা ছুটি বৃদ্ধি: গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত ২২ দফা ছুটি বাড়ানো হয়েছে। প্রথমে গত ১৬ মার্চ সংবাদ সম্মেলন ডেকে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন। প্রথমে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়। পরে প্রথমে ৪ এপ্রিল এবং পরে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এই ছুটি চতুর্থ দফায় বাড়ানো হয় ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত। এরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে রোজার ছুটি শুরু হয়ে যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তা ছিল ১৫ জুন পর্যন্ত।

এরপর একসঙ্গে পৌনে ২ মাস বাড়িয়ে ৬ আগস্ট পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়। পরের দফায় ওই ছুটি ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ে। এরপর এক মাস বাড়িয়ে ছুটি করা হয় ৩ অক্টোবর পর্যন্ত। সেই ছুটি শেষ হওয়ার আগেই ১ অক্টোবর বলা হয়, করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হলো।

২৯ অক্টোবর পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সাধারণ ছুটি ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেই ছুটি শেষ না হতেই ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়। এরপর ঘোষণা দিয়ে প্রথমে ১৬ জানুয়ারি ও পরে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ে ছুটি। পরে ১৪ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় ছুটি বাড়ে। এরপর ২৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে বৈঠক করে শিক্ষাসহ সরকারের ৬টি মন্ত্রণালয়। পরিস্থিতি পর্যালোচনা শেষে সেদিন ঘোষণা করা হয়, ৩০ মার্চ স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা খুলে দেওয়া হবে। আর এর আগের ঘোষণা অনুযায়ী ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হবে। আর শিক্ষার্থীদের ১৭ মে হলে তোলা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় পরে খোলার কারণ হিসাবে বলা হয়েছিল, আবাসিক হলে অবস্থান নির্বিঘœ করতে ওই সময়ের মধ্যে ১ লাখ ৩১ হাজার ছাত্রছাত্রীকে টিকা দেওয়ার কাজ শেষ করা হবে। কিন্তু শহরের পাশাপাশি মফস্বল অঞ্চলেও করোনার ডেল্টা ধরনের সংক্রমণে তা আর হয়ে উঠেনি। এ অবস্থায় ২৯ মে বন্ধ রাখার কথা বলা হয়। সেই ছুটি শেষ না হতেই গত ২৬ মে সংবাদ সম্মেলনে ১৩ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দেন শিক্ষামন্ত্রী।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তাও প্রথমে ৩০ জুন ও পরে ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়। আর সর্বশেষ ২৯ জুলাই রাত ১১টায় পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন বাঁচাতেই সরকার করোনার এই সংকটে বন্ধ রেখেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তাদের জীবন যদি না থাকে তাহলে শিক্ষিত হয়ে কী হবে? তাই আগে জীবন বাঁচাতেই সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শনিবার সকালে রাজধানীর আইডিইবি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। সরকার ষড়যন্ত্র করে শিক্ষাব্যবস্থাকে পিছিয়ে দিচ্ছে- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যকে ‘হাস্যকর’ ও ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, এর আগেও দলটি ভ্যাকসিন নিয়ে ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুঁজেছিল।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: