শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৬:০৭ পূর্বাহ্ন

চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে করোনার ‘ভিন্ন রূপ’

 বাঙলার জাগরণ ডেস্ক : চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে কিছুটা দেরিতে। দেশটির চিকিৎসকরা বলেছেন, ওই অঞ্চলে গুচ্ছ (ক্লাস্টার) সংক্রমণের যে ঘটনা ঘটছে তাতে করোনাভাইরাসের অন্যরকম এক রূপ দেখা যাচ্ছে। উহানে (চীনের এই শহরে প্রথম ভাইরাসটি শনাক্ত হয়) ছড়িয়ে পড়া ভাইরাস থেকে যা আলাদা।

চিকিৎসকরা মনে করেন, কোভিড-১৯ বা নতুন করোনাভাইরাসের জীবাণু সম্ভবত অজানা উপায়ে পরিবর্তিত হচ্ছে। যা ভাইরাসটি নির্মূলের পথ ক্রমেই কঠিন করে দিচ্ছে। ব্লমবার্গের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

কিউ হায়বো নামে চীনের এক শীর্ষ চিকিৎসক মঙ্গলবার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, উত্তরাঞ্চলীয় দুই প্রদেশ জিলিন ও হেইলংজিয়াংয়ে করোনাভাইরাসের ভিন্ন চরিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ অঞ্চলের আক্রান্তরা দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে ভাইরাস বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন। আবার তারা সেরে উঠতেও লম্বা সময় নিচ্ছেন।

উহানে প্রথম যখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ালো তখন এর উপসর্গ প্রকাশ পেতে এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় লাগত। কিন্তু উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে রোগীদের উপসর্গ প্রকাশ পেতে আরও বেশি সময় লাগছে। উহানে চিকিৎসা দিয়ে বর্তমানে দেশের উত্তরাঞ্চলের করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা করছেন ডা. কিউ। তিনি বলেন, দেরিতে উপসর্গ প্রকাশ পাওয়ায় এই অঞ্চলে সংক্রমণ ঠেকানো কর্তৃপক্ষের জন্য বেশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে দ্রুত গুচ্ছ আকারে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে।

জিলিন ও হেইলংজিয়াং প্রদেশের তিনটি শহর- শুলান, জিলিন ও শেংইয়াং শহরে গত দুই সপ্তাহে ৪৬ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে। ক্রমেই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। সংক্রমণ রোধে ওই অঞ্চলের ১০ কোটি মানুষকে ফের লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভাইরাসে ভিন্ন আচরণের নির্দিষ্ট কারণ এখনও খুঁজে পাননি বিজ্ঞানীরা। তবে তারা মনে করেন, উহানের চেয়ে ওই অঞ্চলের মানুষেরা আগে থেকেই চিকিৎসকদের নজরদারিতে থাকার কারণে এমনটা হতে পারে। উহানে যখন প্রথম সংক্রমণটি ছড়িয়ে পড়ে তখন হাসপাতালগুলোতে উপচে পড়া ভিড় ছিল এবং চিকিৎসকরা শুধু গুরুতর আক্রান্তদেরই চিকিৎসা দিয়েছেন।

ডা. কিউ জানান, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আক্রান্তদের বেশিরভাগের শুধু শ্বাসতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। কিন্তু উহানে দেখা গিয়েছিল, বেশিরভাগের হৃদতন্ত্র, কিডনি ও অন্ত্রের ক্ষতি হয়েছিল। এ ছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মোট আক্রান্তদের ১০ শতাংশের অবস্থা গুরুতর। যা উহানের থেকে বেশ কম।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: