রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৮:৫০ অপরাহ্ন

বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন কে হত্যা করা হয়নি নিজেই আত্নহত্যা করেছেন – র‍্যাব

এ আর কাজল সিনিয়র রিপোর্টার :: গত ৫ নভেম্বর ২২ ইং কাজী নুর উদ্দিন নামক একজন ব্যক্তি তার সন্তান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন নুর পরশ এর নিখোঁজ সংক্রান্তে রাজধানীর রামপুরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন বুয়েট শিক্ষার্থীর বাবা। জানা যায় যে, তার সন্তান গত ৪ নভেম্বর ২২ ইং বিকাল থেকে নিখোঁজ রয়েছে। এ প্রেক্ষিতে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও র‍্যাব নিখোঁজ শিক্ষার্থীকে খুজে বের করতে তদন্ত শুরু করে।

গত ৭ নভেম্বর ২২ ইং নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে একটি মৃতদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় নৌ পুলিশ। পরবর্তীতে জানা যায় যে, মৃতদেহটি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নুর পরশ (২৪)। মৃতদেহটি উদ্ধারের পর ফারদিনের বাবা কাজী নুর উদ্দিন রাজধানীর রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।উক্ত ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমসমূহে বহুলভাবে প্রচারিত হওয়ায় দেশব্যাপী ব্যাপক চ্যাঞ্চলের সৃষ্টি হয়। এ প্রেক্ষিতে র‍্যাব উক্ত মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন পূর্বক জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

ফারদিন নুর পরশ নিহত হওয়ার ঘটনায় র‍্যাব তার পারিবারিক সূত্র, অধিকতর তথ্য প্রযুক্তির বিশ্লেষণ, সিসিটিভি ফুটেজসহ স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রের আলোকে রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করে। জানা যায় যে, গত ৪ নভেম্বর ২০২২ বিকাল ৩. ঘটিকায় রাজধানী ডেমরার কোনাপাড়া নিজ বাসা থেকে পরীক্ষার কথা বলে বুয়েটের হলের উদ্দেশ্যে বের হয় ফারদিন। বিকাল আনুমানিক ৫ ঘটিকায় ফারদিন সায়েন্স ল্যাব মোড়ে তার পরিচিতার সাথে তিনি দেখা করে। অতঃপর সেখান থেকে নীলক্ষেত ও ধানমন্ডিসহ পাশ্বভর্তি বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে। পরবর্তীতে সাত মসজিদ রোডে একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা করে।

অতঃপর রাত আনুমানিক ৮ ঘটিকায় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসহ পাশর্বর্তী বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে। পরবর্তীতে তিনি রিক্সাযোগে রামপুরার উদ্দেশ্যে গমন করে। আনুমানিক রাত পৌনে ১০.ঘটিকায় রামপুরা ব্রিজ এলাকায় তিনি রিক্সা হতে নেমে যায় এবং কিছুক্ষণ রামপুরা ব্রিজ এলাকায় ঘোরাফেরা করে। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, পরবর্তীতে তিনি কেরানীগঞ্জের জিনজিরা, বাবুবাজার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা, পুরান ঢাকার জনসন রোড,গুলিস্তানের পাতাল মার্কেট এলাকায় গমন করে।

সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানা যায় যে, রাত ২.ঘটিকায় (সিসিটিভি ফুটেজ টাইম ২.ঘটিকা) যাত্রাবাড়ীর বিবিরবাগিচা হতে নিহত ফারদিনকে লেগুনায় উঠতে দেখা যায়। রাত আনুমানিক ২.২০ ঘটিকায় সুলতানা কামাল ব্রিজের অপর পাশে তারাবো বিশ্বরোডের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লেগুনা থেকে নেমে যায় ফারদিন। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জানা যায় যে, রাত ২.২৬ ঘটিকায় সুলতানা কামাল ব্রিজের তারাবো প্রান্তে ফারদিনের অবস্থান ছিল।

অতঃপর রাত ২.ঘটিকায় সুলতানা কামাল ব্রিজের প্রায় মাঝখানে আসে ফারদিন। উল্লেখ্য যে, ব্রিজের তারাবো প্রান্ত হতে সুলতানা কামাল ব্রিজের মাঝখান পর্যন্ত দুরত্ব আনুমানিক ৪০০-৫০০ মিটার। রাত ০২.ঘটিকায় সুলতানা কামাল ব্রিজের রেলিং ক্রস করে ফারদিন এবং রাত ০২.ঘটিকায় সুলতানা কামাল ব্রিজের উপর থেকে স্বেচ্ছায় নদীতে ঝাঁপ দেয়। ঝাঁপ দেয়ার পর রাত ০২.৩৪ ঘটিকায় শীতলক্ষ্যা নদীর পানিতে পড়ে ফারদিন। রাত ০২.৩৫.৯ ঘটিকায় ফারদিনের মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও রাত ২.৫১ ঘটিকায় ফারদিনের হাতের ঘড়িতে পানি ঢুকে অকার্যকর হয়ে পড়ে।

অদ্য ১৪ ডিসেম্বর ২২ ইং র‍্যাবের গনমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন বুয়েট ছাত্র ফারদিন মৃত্যুর সকল আলামত বিশ্লেষন করে সিসিটিভি ফুটেজ,ডিজিটাল ফুটপ্রিন্টসহ অন্যান্য সকল সংশ্লিষ্ট আলামত বিবেচনায় নিয়ে আমাদের তদন্তে বের হয়ে আসে যে,বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন স্বেচ্ছায় সুলতানা কামাল ব্রিজ হতে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যুবরণ করে বলে।

তিনি আরো বলেন বুয়েট ছাত্র ফারদিন এর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের সুধু র‍্যাব কাজ করে নি অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা ও কাজ করছে পরভর্তিতে আমাদের সকল তথ্য উপাত্ত তাহাদের সাথে মিলে যায় তাই র‍্যাব আমরা ও মনে করি বুয়েট ছাত্র ফারদিন স্বেচ্ছায় আত্নহত্যা করেছেন এটা আমরা ধারনা করছি বলে জানান তিনি । তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ফারদিনের মৃত্যু সংক্রান্ত অন্য কোন সূত্র/আলামত পাওয়া গেলে, তবে তা বিবেচনায় নিয়ে মামলার বিজ্ঞ তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।


© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © ২০২০ বাঙলার জাগরণ
কারিগরি সহযোগিতায়: