রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১০:২১ অপরাহ্ন
এ আর কাজল রিপোর্টার :: র্যাব-৩ সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে একটি আভিযানিক দল গত ১২ ডিসেম্বর ২২ ইং রাতে রাজধানীর বংশাল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে একটি প্রাইভেটকারের পিছনের ডালা হতে বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় তিনটি ব্যাগ ভর্তি ৫০ কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী চক্রের মূলহোতা মোঃ মুকুল হোসেন মকবুল আহমেদ (৪৪) মোঃ আব্দুল শাহীন নোমান হোসেন (৩৩)মোঃ ফয়সাল (২৭)মোঃ আল- আমিন হোসেন (২৪)কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, উক্ত মাদক ব্যবসায়ী চক্রের মূলহোতা মোঃ মুকুল হোসেন মকবুল আহমেদ নিজেকে কখনো নারায়ণগঞ্জ ভিত্তিক লোকাল পত্রিকা “দৈনিক মাতৃভূমির খবর” এর একজন সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার পরিচয় দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে চতুরতার মাধ্যমে কুমিল্লাসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা হতে প্রাইভেটকার যোগে অবৈধ মাদকদ্রব্য গাঁজার চালান বহন করে নিয়ে এসে তার অপরাপর তিন সহযোগীসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নিজ হেফাজতে রেখে ক্রয়-বিক্রয় করত। তার প্রধান সহযোগী ফয়সাল বাংলাদেশ ব্যাংক এর একজন কর্মকর্তার ব্যক্তিগত গাড়ির চালক। ছুটির দিনে বা অবসর সময়ে সুযোগ বুঝে সে এই গাড়িটিকে ব্যবহার করে উক্ত চক্রটির সাথে মিলে মাদকদ্রব্য চোরাচালানের কাজ করে থাকে । গাড়ির মালিকের ব্যবহৃত আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট এর স্টিকার ব্যবহার করে সে নিয়মিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য আনা-নেয়া করে থাকে। চক্রটি দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক পরিবহনের সময় পথিমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্টের তল্লাশী হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিজেদেরকে সাংবাদিক পরিচয় দেয় যাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের মাদক পরিবহনের গাড়িটি তল্লাশী না করে ।
অদ্য ১৩ ডিসেম্বর ২২ ইং র্যাব-৩ এর প্রধান কার্যালয়ে দুপুরে এক সংবাদ সম্মলনে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন গ্রেফতারকৃত আসামীদের মধ্যে মূলহোতা মুকুল হোসেন মকবুল আহমেদ বিগত ২৫ বছর ধরে বিভিন্ন পরিবহনের চালক হিসেবে কাজ করত। অবৈধ পথে সহজেই অধিক অর্থ উপার্জনের আশায় ২০১৬ সাল থেকে সে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত হয়।
চাকুরীচ্যুত হয়ে ২০২২ সালের শুরুর দিকে সে নতুন পথ খুজতে থাকে। এসময় চলতি বছরের জুন মাস থেকে নারায়ণগঞ্জ ভিত্তিক লোকাল পত্রিকা “দৈনিক মাতৃভূমির খবর” এর ড্রাইভার হিসেবে চাকুরী শুরু করে। উক্ত চাকুরীর পাশাপাশি সে সাংবাদিকতার লগো ব্যবহার করে খুব সহজেই মাদকদ্রব্য চোরাচালানের কাজ চালাতে থাকে। একপর্যায়ে তার বিরুদ্ধে এসকল অপকর্মের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেলে তাকে গত ০২ মাস পূর্বে চাকুরী থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এ ভাবে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন সময় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে গাঁজাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্যের ব্যবসা করে আসছে। তার নামে ২০০৮ সালে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় জনৈক ব্যক্তির মৃত্যু ঘটানোর দায়ে হত্যা মামলাসহ একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। ২০০৮ সাল থেকে এপর্যন্ত একাধিক মামলায় সে বিভিন্ন মেয়াদে হাজতবাস করে।
এছাড়াও উক্ত চক্রের অপরাপর দুই সহযোগী মোঃ আব্দুল শাহীন নোমান হোসেন এবং মোঃ আল- আমিন হোসেন বিভিন্ন জায়গা থেকে গাঁজাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে। তাদের প্রত্যেকের নামেই বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে ।গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন ।ফারজানা হক সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) র্যাব-৩।